Subscribe in a reader ASTRONOMY: SUPERNOVA ( সুপারনোভা বা অতি জ্যোতিষ্ক )

Tuesday 11 December 2012

SUPERNOVA ( সুপারনোভা বা অতি জ্যোতিষ্ক )

সুপারনোভা


১৫৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ নভেম্বর ডেনমার্ক এর জ্যোতিবিদ টাইকো ব্রাহে তাঁর মানমন্দির থেকে আকাশে ক্যাসিওপিয়া তারামণ্ডলে একটি নতুন তারার আবির্ভাব দেখতে পান। সেই সময় পৃথিবীতে গ্রীক পণ্ডিত টলেমীর মতবাদ প্রতিষ্ঠিত ছিল । সেটা অনুযায়ী আকাশে চাঁদ অ বায়ুমণ্ডলের দূরে যা কিছু তা ভগবানের  সৃষ্টির আদি থেকে অনড় অচল । টাইকো ব্রাহে এই নতুন তারাটির প্যারাল্যাক্স অথাৎ কৌণিক দূরত্ব হিসেব করে বুঝতে পারেন যে এটি অনেক দূরে মানে চাঁদ ও বায়ুমণ্ডলের চেয়ে দূরে অবস্থিত। এরফলে তাঁর মনে টলেমী প্রতিষ্ঠিত অনড় অচল বিশ্ব দশনের প্রতি সন্দেহ দেখা দ্যায়। এই তারাটি কিছুদিন উজ্জ্বল হয়ে আকাশে থাকার পর আস্তে আস্তে ম্লান হয়ে শেষে আকাশ থেকে মিলিয়ে যায়। টাইকো পরবর্তী কালে একটি ছোট বই তে তারাটির কথা বিস্তারিত লেখেন ও এটিকে ল্যাটিন ভাসায় নোভা স্টেলা বা নুতন তারা আখ্যা দ্যান।    
১৬০৪ সালে আকাশে ঠিক এই রকম আরেকটি তারার আবির্ভাব হয় ও এই সময় আরেকজন বিখ্যাত জ্যোতিবিদ যোহানেস কেপলার আকাশে এটির অবস্থান পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে নিরুপন করেন। 
টাইকো ব্রাহে
theworld.org সৌজন্যে

যোহানেস কেপলার
en.wikipedia.org এর সৌজন্যে


 মানুষ  আধুনিক দূরবীন আবিস্কার হবার পর এই নতুন তারাগুলির সম্পর্কে ধীরে ধীরে অনেক কিছু জানতে পারে। ১৯৩০ সনে লস এঙ্গেলেসের কাছে অবস্থিত মাউন্ট উইলসন মান মন্দির থেকে দুরবিন এর সাহায্যে ওয়াল্টার বাডে ও ফ্রিৎস্ ৎজুইকি এগুলিকে বিশেস ভাবে পয্যবেক্ষন করে বুঝতে পারেন যে এগুলি আমাদের ছায়াপথ গ্যালাক্সির বাইরে বহু বহু দূরে তারার বিস্ফোরন। ৎজুইকি এ গুলির নাম দ্যান সুপারনোভা যা বাংলা করলে বলা যায় অতি জ্যোতিস্ক

আমরা এখন জেনেছি যে সুপারনোভা আসলে মহাশূন্যে ম্রত্যুপথযাত্রি তারার অতিদানবিয় বিস্ফোরন থেকে উৎপন্ন মহাজাগতিক অগ্নিপিণ্ড। এই মহাজাগতিক অগ্নিপিণ্ড দশ হাজার কোটি সুয্যের বা একটি পুরো গ্যালাক্সির (আমরা যে গ্যালাক্সিতে বাস করি অথাৎ ছায়াপথ, তাতে প্রায় দশ হাজার কোটি তারা আছে যদিও তাদের ঔজ্জল্লের মান এক নয়)  সমান উজ্জ্বল। কিন্তু এগুলি মাত্র কিছুদিনের জন্য স্থায়ী।

সব তারার শেষ বিস্ফোরনে হয় না। আমাদের  সুয্যের মত একটি তারা তার জীবনের শেষে তার পারমানবিক জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে  তার গ্যাসের অধিকাংশ বাইরে ছেড়ে দিয়ে একটি শ্বেত বামন বা হোয়াইট ডোয়াফ এ পরিনত হয় ও হাজার কোটি বছর ধরে তার অবশিষ্ট তাপ বিচ্চূরন করে শেষে একটি মৃত কালো পিণ্ডতে পরিনত হয়। এর ব্যাস মাত্র কয়েক হাজার মাইলে (মনে রাখতে হবে একটি তারার ব্যাস সাধারণত কয়েক লক্ষ্য মাইল হয়)।

কিন্তু যদি একটি তারার ভর (বিশেষত একটি শ্বেত বামনের) যদি সূয্যের ভরের ১.৪৪ গুন হয় সেক্ষেত্রে  অন্য পরিনতি তারাটির জন্যে অপেক্ষা করে। যখন তারার ভর এই বিশেষ সীমা লঙ্ঘন করে (এই সীমাটির নাম চন্দ্রশেখর সীমা কারন ১৯৩০ সালে বিখ্যাত নোবেল পদক জয়ী ভারতীয় পদার্থবিদ ও মহাকাশ বিজ্ঞানী সুব্রাহ্মানিয়ান চন্দ্রশেখর এটি আবিষ্কার করেন) তখন তারাটির মৃত্যু অন্য রকম হয়। তখন তারাটির মৃত্যু একটি অতিদানবীয় বিস্ফোরনে হয় এবং তার শেষে পড়ে থাকে গ্যাস ও মহাজাগতিক ধুলিকনার একটি ক্রম বধমান বলয় ও তার মধ্যে একটি নিউট্রন তারা অথবা একটি ব্ল্যাক হোল বা কালো গহ্বর




ফ্রিৎস্ ৎজুইকি
swemorph.com এর সৌজন্যে




সুব্রাহ্মানিয়ান চন্দ্রশেখর
en.wikipedia.org এর সৌজন্যে

সুপারনোভা বিস্ফোরণ তারার অধিকাংশ পদার্থ মহাকাশে  ৩০,০০০ কিলোমিটার/সেকেন্ড এর মত ভয়ানক গতিতে ছুঁড়ে দ্যায় (অথাৎ আলোর গতির এক দশমাংশ) এবং তার ফলে শক্ ওয়েভ বা  আঘাত ঝড় এর সৃষ্টি হয়। এই শক্ ওয়েভ গ্যাস ও ধুলিকনার বলয়টিকে নিয়ে মহাশুন্যে ছড়িয়ে পড়ে।
সুপারনোভা সাধারণত দু ধরনের হয়। টাইপ-১এ ও টাইপ-২।অনেক ক্ষেত্রে একটি শ্বেত বামন তারার একটি অন্য বড় তারা সঙ্গী থাকে (অধিকাংশ তারাই জোড়ে থাকে, অনেক ক্ষেত্রে তিন বা তার বেশি তারার সমষ্টিও একটি সিস্টেম বা সমন্যয়ে অবস্থান করে)। সেক্ষেত্রে শ্বেত বামন তারা টি তার সঙ্গী তারার থেকে তার মহাকর্ষ শক্তি বা গ্র্যাভিটেশনের মাধ্যমে পদার্থ টেনে নিতে থাকে। এই রকম চলতে চলতে যখন শ্বেত বামনের ভর চন্দ্রশেখর সীমা ছাড়ায় তখন তার ভেতরের কারবন্ এর পারমাণবিক গলন (নিউক্লিয়ার ফিউসন, অথাৎ একাধিক কারবন পরমানু যুক্ত হয়ে অন্য একটি ধাতুতে পরিনত হয় ) শুরু হয় (শ্বেত দানব তারা গুলিতে হাইড্রোজেন থাকে না,কারবন ও অক্সিজেন থাকে)। এই গলন অত্যন্ত মারাত্মক গতিতে ঘটতে থাকে যাতে প্রায় তারাটির সমস্ত পদার্থের পারমানবিক গলন হয়এবং মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অতিদানবীয় শক্তির মুক্তি ঘটায় তারাটির সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটে। এগুলি কে টাইপ -১এ সুপারনোভা বলে।
টাইপ -১এ সুপারনোভা গুলির দুটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে।১) এগুলির স্পেকট্রাম বা আলোক বিশ্লেষণ রেখাতে হাইড্রোজেন লাইন বা বামার সিরিজ এর অনুপস্থিত। ২)সমস্ত টাইপ-১এ সুপারনোভা গুলি প্রায় এক ভর যুক্ত হবার জন্যে এগুলোর অধিকতম ঔজ্জ্বল্য প্রায় সমান হয়। সেই জন্যে এগুলোকে ঔজ্জ্বল্যের মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায় ও মহাজাগতিক দূরত্ব মাপা যায়। 


বাইনারি শ্বেত বামন পার্শ্ববর্তী তারার থেকে বস্তু টেনে নিয়ে সুপারনোভা হতে চলেছে
news.harvard.edu এর সৌজন্যে


টাইপ -২ সুপারনোভা অন্য ভাবে হয়। অত্যন্ত্য বেশি বড় তারা বা দানব তারা গুলির সবচেয়ে ভেতরের অংশটির পারমানবিক গলন হতে হতে এমন একটি পযায় পৌঁছয় যে ওই অংশটি লোহাতে পরিনত হয়।লোহার পারমানবিক গলন আর সম্ভব হয় না কারন এই গলন এ শক্তির মুক্তির বদলে শক্তির ক্ষয়  হয়।তখন  তারার ভেতরের থেকে আর শক্তি মুক্ত না হওয়ায় এর মহাকর্ষ শক্তিকে আর আটকে রাখা সম্ভব হয় না এবং তারা টির অতি দ্রুত অন্তিম সংকোচন হয়। এর ফলে অসীম শক্তির মুক্তি ঘটে  ও শক ওয়েভ এর সৃষ্টি হয় ও তারাটির উপরিভাগের বিস্ফোরণ ঘটে। ভেতরে থেকে যায় একটি নিউট্রন তারা অথবা ব্ল্যাক হোল। যেসব ক্ষেত্রে ভেত্ররের অংশটির মহাকর্ষ শক্তি এত বেশি হয় যে আলো ও বেরিয়ে আসতে পারেনা সেসব ক্ষেত্রে এগুলো কে আর বাইরে থেকে দেখা যায় না ।তাই এর নাম ব্ল্যাক হোল বা কালো গহ্বর । টাইপ -২ সুপারনোভার বৈশিষ্ট্য হল যে এর আলোক বিশ্লেষণ রেখাতে হাইড্রোজেন রেখা বা বামার সিরিজ উপস্থিত থাকে।



ব্ল্যাক হোল
didyouknow.com এর সৌজন্যে

ক্র্যাব নেবুলা সুপারনোভা অবশিষ্ট যার মধ্যে রয়েছে একটি নিউট্রন তারা
www4.ncsu.edu এর সৌজন্যে

সুপারনোভা বিস্ফোরণের ফলে দুটো ব্যাপার ঘটে যার পরিনাম সুদুর প্রসারি। সুপারনোভা থেকে নিগত গাস ও ধুলি কনা অন্য তারা ও গ্রহ ইত্যাদির জন্ম দ্যায় । এবং পারমানবিক গলন এর ফলে ভারি পদার্থ   অথাৎ সোডিয়াম,ক্যালসিয়াম,অক্সিজেন, লোহা ইত্যাদি পদাথর জন্ম হয়।এই সমস্ত পদাথশেষ পযন্ত পৃথিবীর মত গ্রহ ও আমাদের মত জীবের সৃষ্টি করে। সুতরাং আমরা আমাদের অস্তিত্বের জন্যে সুপারনোভার কাছে ঋণী।   

  








যদিও ইতিহাস এর আদি থেকে অনেক গুলি জ্যোতিষ্ক কে সুপারনোভা বলে আখ্যা দেওয়া হয় তবুও প্রথম সুপারনোভার বিশ্বস্ত পয্যবেক্ষন করেন চৈনিক জ্যোতিবিদরা ১৮৬ সালে। কিন্তু আধুনিক শক্তিশালী দূরবীন বা টেলিস্কোপ আবিস্কার হবার পর সুপারনোভা বিস্ফোরণ লাইভ দেখার সুযোগ মানুষ ও বিজ্ঞানীরা পান ১৯৮৭ সনে। অস্কার দুহালদে নামক এক টেলিস্কোপ পরিচালক চিলি তে লাস কাম্পামানাস মান মন্দিরে ১৯৮৭ সালের ২৩এ ফেব্রুয়ারি কফি খেতে বেরিয়ে আকশে বৃহৎ ম্যাগেলানিক মেঘের (লাজ ম্যাগেলানিক ক্লাউড ) মধ্যে একটি অত্যন্ত উজ্জ্বল নতুন তারা দেখতে পান। লাজ ম্যাগেলানিক ক্লাউড একটি ছোটো গ্যালাক্সি যা দক্ষিন গোলাদ্ধ থেকে দেখা যায়। ভালো করে খুঁটিয়ে দেখে বোঝা যায় যে এটি একটি সুপারনোভা । সঙ্গে সঙ্গে সারা পৃথিবীর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা সব রকম যন্ত্রপাতি নিয়ে এটির পুঙ্খানুপুঙ্খ পয্যবেক্ষন করতে থাকেন ও আজো  করে চলেছেন।এই বিশেষ সুপারনোভাটিকে সব রকম ওয়েভ লেন্থের (অথাৎ রেডিও থেকে গামা রশ্মি পযন্ত ) টেলিস্কোপের সাহায্যে বিশ্লেশন করা সম্ভব হয়। এটির নাম দেওয়া হয় এস. এন. ১৯৮৭. এ (সুপারনোভা কে জ্যোতিবিদরা এস. এন নামে আখ্যা দ্যান)।   
এই সমস্ত আহৃত তথ্য থেকে বিজ্ঞানীরা সুপারনোভা  সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।ইউনিভারসিটি অফ শিকাগো তে বিজ্ঞানীরা কম্পিউটারে একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণকে পুরোপুরি ভাবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে সৃজন করতে সক্ষম হয়েছেন। এটি করতে অবশ্য লেগেছে এমন একটি সুপার কম্পিউটার জার ক্ষমতা ১২৮,০০০ তি ডেক্সটপ এর সমান ও হিসেব করতে লেগেছে ৬০,০০০ ঘন্টা। সুপারনোভার একটি বিশেষ ব্যাপার হল এটি হবার সময় ইলেক্ট্রন ও প্রোটন যুক্ত হয়ে নিউট্রন তৈরি হয় এনং এগুলি প্রচণ্ড চাপে  একসঙ্গে জমে থাকে। ইলেকট্রন ও প্রোটন এর সংযুক্তিতে সৃষ্টি হয় এক ধরনের ভুতুড়ে কণার যার কোণো বৈদ্যুতিক শক্তি নেই কিন্তু ভর আছে । এই সব কণা গুলি প্রায় সব কিছুর মধ্যে দিয়ে কোনো রকম বিক্রিয়া না করে চলে যায় বলে টের পাওয়া যায় না। প্রতি মুহূর্তে আমাদের প্রত্যেকের ভেতর দিয়ে তো বটেই, সমস্ত পৃথিবীর ভেতর দিয়ে অগনিত নিউট্রন চলে যাচ্ছে কিন্তু আমরা বুঝতে পারছি না। এবং শুধু যে মাথা থেকে পায়ের ভেতর দিয়ে চলে যাচ্ছে তা নয় পা দিয়ে ঢুকে মাথা দিয়েও বেরিয়ে যাচ্ছে। এগুলির কথা অনেক দিন ধরেই  বিজ্ঞানীরা ভবিষৎবাণী করেছিলেন কিন্তু কোনোদিন এগুলি পরীক্ষাগারে ধরতে পারেন্নি। এন এস ১৯৮৭এ বিস্ফোরণের সময় কিন্তু পৃথিবীর কয়েকটি জায়গায় (জাপান ও রাশিয়াতে ) মাটির অনেক নিচে ভূগভস্থ পরীক্ষাগারে বেশ কয়েকটি নিউট্রিনো ধরা পরে। এর ফলে সুপারনোভার জন্মলগ্নে নিউট্রিনোর উতপত্তি সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের অনুমান সত্য প্রমানিত হয়।
সুপারনোভার উৎপত্তিতে যে শুধু বস্তু ও কনার সৃষ্টি হয় তাই নয় ,প্রচুর পরিমানে অত্যন্ত শক্তিশালী ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ বা বিদুত-চুম্বকিও রস্মি যেমন এক্স-রে আর গামা রের সৃষ্টি হয়।এই সব রশ্মি যদি পৃথিবীর খুব কাছাকাছি যথেষ্ট পরিমানে উৎপন্ন হয় তা হলে এগুলি যে শুধু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বিশাল  পরিবতন ঘটাবে তা নয় জীবনের মূল ভিত্তি ডি.এন.এ অনুর পরিবতন করে দেবে। তাতে ভালো বা খারাপ দুইই হতে পারে তবে জীবন কে যেমন জানি তা পরিবতিত হয়ে যাবে।
মনে করা হয় ৪৫ কোটি বছর আগে সামুদ্রিক প্রানের যে সামগ্রিক বিনাশ হয়েছিল তার কারন পৃথিবীর কাছে কোনো সুপারনোভার উৎপত্তি।
আমাদের ছায়াপথ বা মিল্কিওএ গ্যালাক্সি তে গড়ে ৫০ বছরে একটি করে সুপারনোভার জন্ম হয়। ছায়াপথে বেশ কয়েকটি তারা আছে যেগুলো যে কোনো সময় সুপারনোভা তে পরিনত হতে পারে। তার মধ্যে বিশেষ হল ইটা ক্যারিনা (প্রায় ৭৫০০ আলো বছর দূরে) আর বিটেলজিউস বা আরদ্রা নক্ষত্র ।আরদ্রা নক্ষত্র ওরাওন বা কালপুরুষ তারামণ্ডলের কাঁধের তারাটি এবং এটি ৫০০ আলো বছর দূরে। এগুলি যেকোনো সময় সুপারনোভাতে পরিনত হতে পারে।সেটা এই মুহুরতেও হতে পারে বা ১০ লক্ষ্য বছর পরেও হতে পারে। কিন্তু হবে যে তা নিশ্চিত এবং যখন হবে তা একটা দেখবার মত জিনিষ হবে। দিনের আলোয় এদের দেখা যাবে এবং হয়তো চাঁদের আলো কে ম্লান করে দেবে।
 আরদ্রা নখত্র Betelegeuse
ancientvisitors.sk এর সৌজন্যে

টাইপ ১এ সুপারনোভার অস্তিত্ব মানুষ অনেক দুরের দূরত্ব মাপার এক হাতিয়ার দিয়েছে। আগেই বলেছি এগুলির ভর এবং তার ফলে অধিকতম ঔজ্জ্বল্য প্রায় সমান। অথাৎ এর আসল ঔজ্জ্বল্য প্রতি ক্ষেত্রেই প্রায় সমান। তাই এগুলি কত উজ্জ্বল বা ম্লান দেখাচ্ছে তার হিসেব করে সেটা ঠিক কতটা দূরে রয়েছে তার খুব নিভর যোগ্য হিসেব করা যায়। এর থেকে বোঝা যায় যে গ্যালাক্সিতে এটি রয়েছে সেটি কতটা দূরে। এর ফলে গালাক্সির দূরত্ব ও তার আলোক বিশ্লেষণ রেখাতে রেড শিফ্ট বা ডপলার এফেক্ট বিচার করে তার গতি নির্ণয় করা যায়। গতি ও দূরত্তের তুলনা করে এটা  বোঝা গ্যাছে যে গ্যালাক্সি গুলো যত দূরে তত বেশী বেগে আমাদের থেকে ও একে অন্যের থেকে সরে যাচ্ছে। আর এও জানা গ্যাছে যে যত দূরে এগুলো অবস্থিত তার তত ত্বরন বেশী মানে গতিবেগ প্রতি মুহূর্তে তত বেশি করে বেড়ে চলেছে। গ্যালাক্সিগুলির গতি ও দূরত্ব অনুযায়ী পেছিয়ে গিয়ে (ইন্টারপোলেশন) বোঝা গ্যাছে এই ব্রহ্মাণ্ড প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বা ১৩৭০ কোটি বছর আগে একটি বৃহৎ বিস্ফোরণ বা বিগ ব্যাং এর থেকে সৃষ্টি হয়েছে।স্থান ও সময়্যের সৃষ্টি হয়েছে সেই মুহুত্তে।আরো বোঝা গ্যাছে যে কোনো অননুভূত শক্তি বা ডাক এনাজি‾  আছে যা ক্রমবধমান বেগে পুরো বিশ্ব কে একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। অথাৎ নতুন কোনো আবিস্কার না হওয়া অবধি এটা বলা যায় যে একটা সময় আসবে যে পৃথিবী বা বিশ্বের অন্য কোন জায়গার আকাশে অন্য কোন জ্যোতিষ্ক দেখতে পাওয়া যাবে না ও  ব্রহ্মাণ্ডের মৃত্যু হবে এক হিমশীতল অন্ধকারে। 


No comments:

Post a Comment